নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ যোগদানের ১২ দিনের মাথায় হবিগঞ্জের জেল সুপার মোঃ নেছার আলমকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। মোঃ নেছার আলম গত ৪ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জে জেল সুপার হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের ১২দিনের মাথায় তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। গতকাল ১৯ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সিনিয়র সচিব মোঃ মশিউর রহমান এনডিসি স্বাক্ষরিত এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে কর্মরত কারা তত্ত্বাবধায়ক মোঃ নেছার আলম-কে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সনের ৫৭ নং আইন) এর ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি হতে অবসর প্রদান করা হলো। সম্প্রতি হাসিনা সরকারের পতনের সপ্তাহ খানেক পূর্বে দলীয় তদবিরে শরিয়তপুর থেকে বদলি হয়ে হবিগঞ্জে আসেন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নিজের চেহারা পরিবর্তন করতে দাঁড়ি কেটে ক্লীন সেভ করেন। এমনকি তিনি তার অপকর্ম ঢাকতে এবং দেশ ত্যাগ করতে মুখের দাঁড়ি পেলে দিয়ে নিজের পরিচয় গোপন করেছেন। অপর একটি সূত্র জানায় দু-একের মধ্যেই তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যেতে পারেন। এর আগে তিনি কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার হন। দায়িত্ব পালনকালে তার তত্ত্বাবধানেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জামায়াত ও বিএনপির ৪ নেতা কামারুজ্জামান, আলী আহসান মুজাহিদ, মতিউর রহমান নিজামী ও সালাহউদ্দিন কাদেরের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসি কার্যকর করতে পেরে পেশাগত জীবনের ইতিহাসে সেরা অর্জন হিসেবে গর্বের সাথেই বলে বেড়াতেন নেছার আলম। সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানার গছিয়া গ্রামের মরহুম ফরিদ উদ্দিনের পুত্র নেছার আলম। ডাক নাম মুকুল। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় করে কক্সবাজার কলাতলির গ্র্যান্ড মেরিনা নামের একটি হোটেলে ৫টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন নেছার আলম। ভবনটি তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় ছেলে ও ঘনিষ্ঠদের নামে এসব ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে। এসব ফ্ল্যাটের আনুমানিক মূল্য সাড়ে ৩ কোটি টাকা বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়। এছাড়াও ঢাকার বনানীতে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, নিজ জেলা সুনামগঞ্জ প্রচুর জমি-জমা, বিলাসবহুল বাড়ি সিলেট শহর ও দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রেও বাড়িসহ অঢেল অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।
Leave a Reply