শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কাকাইলছেও- রসুলপুর সড়ক বর্ষা মৌসুমে  চলাচলে চরম দুর্ভোগ মালয়েশিয়ায় আজমিরীগঞ্জের প্রবাসী মহিবুরের মৃত্যু শোকার্ত পরিবার সাবেক এমপি মজিদ খানের পুকুরপাড়ে বজ্রনিরোধক যন্ত্র শেখ হাসিনা ও মাহবুব আলীসহ ৫ জনের বিরোদ্ধে মামলার প্রস্তুতি অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ হবিগঞ্জ বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে পুলিশের ভুমিকা মাধবপুরে ৫২ মাদক কারবারি গ্রেফতার॥ মূলহোতারা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে মাধবপুরের আজহার কিশোরগঞ্জে ৪০ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার ৩ হবিগঞ্জে সরকারী কলেজ শিক্ষকদের মতবিনিময় সভা জেলা কমিটি গঠন মাদক, বাল্য বিবাহ ও ইন্টানেটে আসক্তি প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের শপথ
বানিয়াচংয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতসহ দুনীর্তির অভিযোগে বিক্ষোভ

বানিয়াচংয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতসহ দুনীর্তির অভিযোগে বিক্ষোভ

বানিয়াচং প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের বানিয়াচং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ আনজব আলীর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন দূনীর্তির অভিযোগে শিক্ষক আনজব আলীর অপসারণের দাবীতে গতকাল রোববার বেলা ১১ টায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে অত্র বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক সহস্রাধিক ছাত্রীরা। প্রায় ২ ঘন্টারও অধিক সময় তারা বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থাান করে বিক্ষোভ প্রর্দশন করে। এসময় বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা অনতিবিলম্ভে দুনীর্তিবাজ শিক্ষক আনজব আলীর অপসারনসহ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে বর্তমান দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষকের কাছে জোর দাবী জানান। অন্যতায় আরো কঠোর কর্মসুচী নেয়া হবে বলেও তারা জানান। অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষক মোহাম্মদ আনজব আলী বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকাকালীন বিদ্যালয়ের নিজস্ব একাউন্ট থেকে টাকা তুলে বিদ্যালয়ের কাজে ব্যয় না কওে এ টাকা নিজে পকেটস্থ করেছেন। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এর মহা-পরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অত্র বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ। জানা যায়, বানিয়াচং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ আনজব আলী বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে অত্র বিদ্যালয়ের অভিভাবকগণ বিভিন্ন সময়ে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে ছাত্রীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি তা স্পষ্ট হয়েছে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে। শিক্ষক আনজব আলীর বিরুদ্ধে অত্র বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী তৈয়বা খাতুন জান্নাত লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন তার কাছ থেকে সার্টিফিকেট সংশোধনের জন্য ১৭ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে। অথচ সার্টিফিকেট সংশোধনের জন্য নামমাত্র টাকা বোর্ডে জমা দিয়ে তা পকেটস্থ করেছেন শিক্ষক আনজব আলী। ১০ম শ্রেণীর অপর এক ছাত্রী উবাইদা জাহানও একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। উবাইদা জানান, আমার এবং আমার বোনের সার্টিফিকেট এ নাম সংশোধনের জন্য তাদের কাছ থেকে ২১ হাজার টাকা নেয়া হয়। যা স্বল্প টাকা দিয়েই সংশোধন করা সম্ভব, এই টাকা নেয়ার পরও তিনি তাদের কাছে আরো টাকা দাবী করেছেন মর্মে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষক আনজব আলীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ২জন ছাত্রী। ফাহমিদা আক্তার ও জেনিসা রহমান। তারা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন ৪/০১/২০২১ হতে ০৬/০৭/২০২৪ সময়ের মধ্যে শিক্ষক আনজব আলী অন্য বিদ্যালয়ের তুলনায় তাদের কাছ থেকে ৩শ টাকা করে বেশী ভর্তি ফি নিয়েছেন,২০২০ সালে করেনাকালীন সময় বিদ্যালয় বন্ধ থাকার পরও তাদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে টিফিনের টাকা, পরিচয়পত্র বাবদ তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হলেও তাদের পরিচয়পত্র দেয়া হয়নি। এছাড়া প্রতিবছর ওয়াইফাই, বৃক্ষরোপন বাবদ টাকা নেয়া হলেও কার্যত তা কিছুই করেননি শিক্ষক আনজব আলী। এমনকি ভর্তি এবং বিভিন্ন খাতে টাকা নেয়া হলেও কোন রশিদ দেয়া হয় না ছাত্রীদের। এসব বিষয়ে শিক্ষক আনজব আলীর কাছে ছাত্রীরা জানতে চাইলে তিনি তাদের বহিস্কার করে দেয়া হবে বলে হুমকি প্রদান করেন। এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে সরেজমিন বালিকা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে গেলে বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ ছাত্রীদের দেয়া অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান। ছাত্রীদের অভিযোগ ছাড়াও শিক্ষক মোহাম্মদ আনজব আলীর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ৪টি একাউন্ট থেকে টাকা আত্মসাতের প্রমান মেলেছে। গত ১১ জুলাই ২০২৪ তারিখে জলযোগ একাউন্ট ( যার হিসাব নং- ১০৩২১০১০৪৬০২৪) থেকে শিক্ষক আনজব আলী ৫০ হাজার ৮শ৩০ টাকা উত্তোলন করেন। যা বিদ্যালয়ের কোন কাজে ব্যয় না করে নিজের পকেটে রেখেছেন। একই তারিখে কম্পিউটার বাবদ টাকা উত্তোলন করেন ১০ হাজার টাকা ( যার হিসাব

নং-১০৩২১০১০৭১০৯১)। এ টাকাও তিনি সংশ্লিষ্ট খাতে ব্যয় করেন নি। একই তারিখে বিবিধ খাত দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করেন ২০ হাজার টাকা (যার হিসাব নং১০৩২১০১০৫৭৬৫৭)। এ টাকাও তিনি বিদ্যালয়ের কাজে ব্যয় করেননি। গত ৮/০৪/২০২৪ ইং পরিচয়পত্র বাবদ টাকা উত্তোলন করেন ৩৯ হাজার ৪শ ১০ টাকা (যার হিসাব নং-১০৩২১০১০৬৩৭৬২)। এ টাকাগুলোও তিনি এ খাতে ব্যয় না করে নিজের পকেটে রেখেছেন। বিগত ২৮ আগষ্ট অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দের সাধারণ নিয়মিত সভায় শিক্ষক মোহাম্মদ আনজব আলীর টাকা আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে বিস্তর আলোচনা হলে বিদ্যালয়ের ব্যয়ের খাতাগুলো নিরীক্ষণ করে ৪টি খাতে শিক্ষক আনজব আলী কর্তৃক ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের পর তা বিদ্যালয়ের কাজে ব্যয় করেছেন মর্মে কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। এ সভায় অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ আনজব আলীও উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে বর্তমান প্রধান শিক্ষক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ জানান, আজকে যে বিষয় নিয়ে অত্র বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান ছাত্রীরা বিক্ষোভ করছে আমি ইতিমধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। শিক্ষক মোহাম্মদ আনজব আলীর টাকা আত্মসাতের বিষয়টি লিখিতভাবে মধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালককে জানানো হয়েছে। এছাড়া ছাত্রীদের কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষক আনজব আলীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com