স্টাফ রিপোর্টার ॥ চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের বিএডিসির বীজ ও সারের ডিলার মফিজ মিয়ার বিরুদ্ধে ভেজাল বীজ ধান বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে। গত ১ অক্টোবর চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এ অভিযোগ করেছেন উপজেলার গোছাপাড়া গ্রামের মৃত আঃ রশিদ চৌধুরীর পুত্র আঃ আউয়াল চৌধুরী একই গ্রামের মৃত আঃ হাসিমের পুত্র আঃ রহমান ও হারাজুরা গ্রামের মৃত আঃ হাশিমের পুত্র আঃ রউফ। অভিযোগ কারীরা বলেন, উন্নত ও উচ্চ ফলনশীল বলে নির্ধারিত বিক্রয় মূল্যের অধিক দামে তাদের কাছে বিনাধান ১৭ এর বীজধান বিক্রয় করেছেন মফিজ মিয়া। বিক্রয়ের সময় তাদেরকে কেয়ার (৩৬ শতক) প্রতি ৩৫ মণ ধান উৎপাদন হওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। কিন্তু বীজতলা থেকে জমিতে চারা লাগানোর ১৫/২০ দিনের মধ্যেই গাছে থোড় চলে আসায় ভালো ফলন দূরের কথা তাদের পূঁজি ফেরত পাওয়ার আসাও ক্ষীণ হয়ে যায়। বিষয়টি মফিজ মিয়াকে অবগত করলে তিনি বেশি করে সার দেওয়ার পরামর্শ দেন। তাতেও কোনো ফলাফল না পেয়ে পূণরায় মফিজ মিয়ার কাছে গেলে মফিজ মিয়া তাদেরকে গালমন্দ করে তার দোকান থেকে বের করে দেন। উল্লেখিত ৩ কৃষকের মধ্যে আওয়াল চৌধুরী ও আঃ রউফ বর্গাচাষী। তারা ধারদেনা করে অন্যের জমি চাষ করেন। জমিতে ভালো ফসলের সম্ভাবনা না থানায় জমির মালিকের ধান ও ধারদেনা পরিশোধ নিয়ে তারা চিন্তিত। একই প্রতিষ্ঠান থেকে বীজ ধান ক্রয় করে এমন ভুক্তভোগী হয়েছেন উপজেলার দক্ষিণ কৃষ্ণনগর গ্রামের মৃত দেওয়ান মিয়ার পুত্র কাজল মিয়া, একডালা গ্রামের আঃ গফুরের পুত্র আলতা মিয়া, গোছাপাড়া গ্রামের মৃত ছবদর আলী মীরের পুত্র ছিদ্দিক আলী মীর, কালামন্ডল গ্রামের মৃত ছিদ্দিক আলীর পুত্র সফিক মিয়া। ভুক্তভোগী কৃষকদের ৪ জনই বর্গাচাষী। মফিজ মিয়ার কাছ থেকে ছিদ্দিক আলী মীর ও সফিক মিয়া ব্রি ৪৯ জাতের বীজ ধান কিনে জমিতে লাগিয়ে ছিলেন। প্রতি ব্যাগ বীজ ধান তারা ৬৫০টাকা দরে ক্রয় করেছেন। যার নির্ধারিত বিক্রয় মূল্য ৫৯৫ টাকা। এর আগে ২০২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি অধিক মূল্যে সার বিক্রয়ের দায়ে মফিজ মিয়াকে অর্থদণ্ড দিয়েছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ বিষয় মফিজ মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিনাধান ১৭ উচ্চ ফলনশীল জাত। কৃষকরা ২২ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে চারা রোপন করলে ৩০/৩৫ মণ ধান পাওয়া যেতো এটা কাগজে লেখা আছে। নির্ধারিত বিক্রয় মূল্যের অধিক দাম রাখার কারণ হিসাবে তিনি বলেন, বিএডিসি তাকে ১৩% লাভে বিক্রয় করতে বলেছে। তিনি তার থেকে আরও কম লাভে বিক্রি করছেন। বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সায়েদুল ইসলাম বলেন, বিনা ধান ১৭ একটি স্বল্প মেয়াদি ফসল। যে সকল কৃষকরা ধান চাষের পর জমিতে সরিষা, আলু, ভুট্টা ইত্যাদি চাষ করেন তারা সাধারণত এ জাতের ধান চাষ করেন। এ ধানের চারা ১৬ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে সকল সার ওষুধ দিয়ে রোপণ করতে হয়।
Leave a Reply