নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের কৌটায় মাধবপুর উপজেলার জন্য বিশেষ বরাদ্দের ৫০ লক্ষ টাকা ভাগবাটোয়ারা অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা ও সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে। মনগড়া প্রকল্পের মোটা অংকের টাকা ভাগভাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করার কথা চাউর হয়েছে জনমনে। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় দ্বিগবিদ্বিগ ছুটতে থাকে আত্মসাৎকারী চক্রটি। ভূয়া প্রকল্পে অর্থ আত্মসাতের খবরটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)র প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম মৃধা’র নামে স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় প্রতিবাদ প্রকাশ করে। গতকাল মোবাইল ফোনে প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কোন ধরনের প্রতিবাদ পত্রে তিনি স্বাক্ষর করেন নি, এবং কোন সংবাদের প্রতিবাদ ও করেন নি বলে নিশ্চিত করেন। বরাদ্দের ফাইল নিজ হেফাজতে রেখে তথ্য না দেওয়ার জন্য কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফয়সাল। বিশেষ বরাদ্দের প্রকল্পের কাগজপত্র স্থাানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যান দপ্তরে রক্ষিত থাকার কথা থাকলে একমাত্র ইউএনও কুক্ষিগত করে রেখেছেন। নিজ স্বার্থ হাসিলে গোপনীয়তা রক্ষায় ইউএনও’র স্বচ্চতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সচেতন মহলের মাঝে।
জানা গেছে, গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে সংসদ সদস্যের কোটায় চা শ্রমিকদের রেইন কোটের জন্য ৫ লাখ, সুরমা চা বাগানে ১০ নং সেকশনের ২টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষ নির্মানে ৩ লাখ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া সামগ্রীর জন্য ১২ লক্ষ, গ্রামীন রাস্তায় সংস্কারের জন্য সীট সরবরাহের ৪ লাখ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফ্যান সরবরাহে ৩লাখ, উপজেলা সম্মেলন কক্ষে সাউন্ড সিস্টেম ৫ লাখ, হত দরিদ্র নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণে ৩ লাখসহ ১৬টি প্রকল্পের বিপরীতে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পেয়েছিল। বরাদ্দকৃত ওই টাকা নিজ নিজ সংসসদীয় এলাকায় পছন্দমতো রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্ট, হাটবাজারের মতো অবকাঠামো উন্নয়ন করার কথা ছিল। ওই বরাদ্দের ২লক্ষ টাকা পর্যন্ত একজন জনপ্রতিনিধিকে সভাপতি করে প্রজেক্ট ইম্প্রিমেন্ট কমিটি (পিআইসি) করে ব্যয় করা যায়। অন্যথায় টেন্ডার আহ্বান
করার বিধান রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে গ্রহনকৃত প্রকল্পগুলো পুরোপুুরি সম্পন্ন না করেই পে-অর্ডারের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে নেন ইউএনও। ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের অপসারন করা হয়েছে। সেই সুযোগে বিশেষ বরাদ্দের টাকা মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কতিপয় রাজনৈতিক নেতা, সংবাদকর্মী মিলে ভাগবাটোয়রা করে নেন। অপ্রয়োজনীয় ভূয়া প্রকল্প তৈরী করে মানহীন কাজে টাকাগুলো বিলিবন্ঠন করা হয় । যা সরজমিনে খোজ নিলে মনগড়া প্রকল্পগুলোর প্রমান বেরিয়ে আসবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুধু মাত্র সাবেক সংসদ সদস্যের বরাদ্ধই নয় বিভিন্ন ভাবে সরকারী অর্থ তসরুপ করার অভিযোগ ও রয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর তিনি ধরাকে সরাজ্ঞান করে কতিপয় স্থানীয় কোন কোন রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও সংবাদকর্মীকে তুষ্ট করে সরকারী টাকার হরিলুট করে চলেছেন। এ ব্যাপারে সরকারের উর্দ্ধতন মহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন মাধবপুরবাসী।
Leave a Reply