স্টাফ রিপোর্টার ॥ চুনারুঘাটের একমাত্র নেতা দাবীদার তিনি। নাম আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্কর। ৫ বারের সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। দু’টার্ম উপজেলা চেয়ারম্যান। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে তিনি ঘুষ দূর্নীতি করেননি সদর্পে দাবী তার। তবে তার পুত্র রিমন লস্কর ও যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান চৌধুরীই উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা বিভিন্ন প্রকল্পের নামে। ৪’শ টিউবওয়েল বিতরণে প্রতিটিতে গ্রহন করেছেন ২৫ হাজার টাকা করে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। যদিও লস্কর সাহেব কোন দুর্নীতি করেননি বলে বড় বড় কথা বলে থাকেন। বিগত ৫ বছর চেয়ারম্যান থাকাকালে আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির উপদেষ্টার পদে ছিলেন। বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মাহবুব আলীকে ব্যবহার করে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। শুধু ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাহবুব আলীকে জিতিয়ে দেয়ার নামে তার সহযোগী লুৎফুর রহমান চৌধুরী ও তার পুত্র রিমন লস্করকে দিয়ে কোটি টাকা আদায় করার কথাও জানা গেছে। লুৎফুর চৌধুরী চুনারুঘাট উত্তর বাজারে গড়ে তুলেছেন অট্টালিকা। তিনি বিগত ১৫ বছর চুনারুঘাট থানার দালালী করে কামিয়েছেন বিপুল পরিমান অর্থ। ঢাকায় করেছেন একাধিক ফ্লাট ও প্লট। কিন্তু স্বৈরাচার পতনের পরও কাদির লস্কর, রিমন লস্কর ও তাদের দুস্কর্মের অন্যতম সহচর লুৎফুর রহমান চৌধুরী এখনো অধরা। লুৎফুর চৌধুরী ক্ষমতার অপব্যবহার করে চুনারুঘাট বাল্লা সড়কের আহমদাবাদ ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামে সীমান্ত নামে একটি ব্রীক ফিল্ড করে ১০ বছর যাবত ব্যবসা করে আসছেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই আওয়ামী দলীয় প্রভাব খাটিয়ে চালিয়েছেন ইট তৈরির ব্যবসা। কাদির লস্করের ছত্রছায়ায় থেকেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে করেছেন অবৈধ ব্যবসা। সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও চা বাগানের শেডি টি নিপাত করেছেন অবলীলায়। মাদক চোরাচালানসহ সীমান্তের চোরাই গরুর ব্যবসায়ও ছিল লুৎফুর চৌধুরীর সক্রিয় বলিষ্ট ভূমিকা। মামলা তদবীরসহ থানা ছিল লুৎফুর চৌধুরীর নিয়ন্ত্রণে। তার শশুর পুলিশের একজন নিম্ন পর্যায়ের অফিসার থাকায় তিনি ছিলেন পুলিশের ‘জামাই’। এ সুবাধে লুৎফুর চৌধুরী এখন কাড়ি কাড়ি টাকা ও ঢাকাসহ চুনারুঘাটে বিপুল জমিজমা ও প্লট ফ্লাটের অধিকারী। তিনি এবং কাদির লস্কর ও তার পুত্র রিমন লস্কর এডিবি’র প্রকল্প ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের টিউবওয়েল-সাবমারসিবল টিউবওয়েল বিতরণের নামে ব্যাপক দুর্নীতি করেও এখনো আইনী ধরা ছোঁয়ার উর্ধ্বে। এ বিষয়ে স্থানীয় জনগণের মাঝে নানা প্রশ্ন, নানা জিজ্ঞাসার উদ্ভব হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেছেন, এত অপরাধ করেও কেন এই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। এর রহস্যই বা কি। কাদির লস্কর ও তার পুত্র এবং লুৎফুর চৌধুরীকে কি আইনের আওতায় এনে জনগণের বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ করার বিচার হবে না? বিষয়গুলো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে সুষ্ঠ তদন্তের আশু দৃষ্টি কামনা করছেন চুনারুঘাটের অধিকার থেকে বঞ্চিত অসংখ্য মানুষ।
Leave a Reply