মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ মাধবপুরে রাতের আঁধারে এক্সেভেটর দিয়ে অবৈধভাবে মাটি কাটা চলছে। প্রশাসনের নীরবতার সুযোগে পরিবেশ আইন অমান্য করে কৃষি জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে বিক্রি করছে একাধিক চক্র। জমি হতে কেটে নেওয়া মাটি ট্রাক দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে কোটি কোটি টাকার জমি। সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। এতে জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও হুমকির মুখে পড়ছে। এভাবে মাটি কাটা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে নেওয়ার ফলে ফলন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয়। আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। উর্বর কৃষি জমি থেকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কিংবা উর্বর উপরিভাগের মাটি বিনষ্ট হয়,পরিবেশ, প্রতিবেশ বা জীব বৈচিত্রের ক্ষতি সাধিত হলে মাটি কাটা যাবে না। ড্রেজার বা এক্সেভেটরের মাধ্যমে বা অন্য কোনো কৌশলি প্রক্রিয়ায় বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। তা ছাড়া উক্ত জমিসহ পার্শ্ববর্তী অন্য জমির ক্ষতি, চ্যুতি বা ধসের উদ্ভব হলেও ওই জমি থেকে মাটি কাটা যাবে না। পরিবেশ আইন অনুযায়ী কৃষি জমির মাটি কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর এলাকা থেকে রাতের আঁধারে ১০ থেকে ১৫টি ট্রাক দিয়ে টপসয়েল কেটে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় বাবুল মিয়া, ফারুক মিয়া, তাজন মিয়া ও আব্দুল আলী নামে প্রভাবশালী চার ব্যাক্তি। মাটি কাটার অনুমোদন আছে কি না জানতে চাইলে উল্লেখিত লোকজন সাংবাদিকদের দেখে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে সুকৌশলে পালিয়ে যায়। এ ছাড়াও ধর্মঘর-সন্তোষপুর নিজ নগর,গন্ধবপুর,কাদির চক, মেহেরগাও সহ বেশ কিছু এলাকা থেকে প্রতিদিন রাতের আঁধারে অবৈধভাবে কৃষি জমিতে এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে কেটে মাটি ও বালু লুট করে নিয়ে যাচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই জানান, দেশের পট পরিবর্তনের পর তারা আড়ালে থেকে কয়েকজন বিএনপি নেতাকে সামনে দিয়ে আবারও মাটির ব্যবসা জমজমাট করার চেষ্টা করছে। এই বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে উপজেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছে স্থানীয় জনগণ। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: মুজিবুর রহমান জানান, অবৈধভাবে রাতের আঁধারে মাটি কাটার অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে অনতিবিলম্বে আইনানুগভাবে মাটি কাটা বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
Leave a Reply