রবিবার, ১৩ Jul ২০২৫, ০৬:৩১ পূর্বাহ্ন

পারভেজ চৌধুরীর নেতৃত্বে মাধবপুরে সিলিকা বালু হরিলুট

পারভেজ চৌধুরীর নেতৃত্বে মাধবপুরে সিলিকা বালু হরিলুট

মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ চলতি মাসের ১৫ মে বুধবার মন্ত্রী পরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে বালু মহাল সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ভার্চুয়াল এ সভায় সকল বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের সাথে সংযুক্ত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা লেঃ জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.),  ভূমি মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়না হাসান সভায় যুক্ত ছিলেন। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর ও যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্ত মাধবপুরে অবস্থিত ৩ টি সিলিকা বালু মহাল থেকে হরদম বালু উত্তোলন করে বিক্রি হচ্ছে। অবৈধভাবে সিলিকা বালু উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধে মন্ত্রী পরিষদের সভার সিন্ধান্তের পর কোন অভিযান হয়নি। যে কারনে বালু পাচারকারীরা বেপরোয়া হয়ে মনতলা, চৌমুহনী ও রসুলপুর প্রায় ১৭শ ২৩ একরের ৩টি সিলিকা বালু কোয়ারীতে অবৈধ মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। আর এসব বালু পাচারকালে প্রতি ট্রাক্টরে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা রয়েলিটি আদায় করে বৈধতা দিচ্ছে। সাধারণ বালু মহালের ইজারদার বিএনপি’র সহ-সভাপতি ৬নং শাহজাহানপু ইউ/পি চেয়ারম্যান পারভেজ হোসাইন চৌধুরী। প্রশাসনকে বোকা বানিয়ে সরকারের প্রায় ৭ কোটি টাকা মূল্যের ৩টি সিলিকা বালু কোয়ারী থেকে চলছে বালু বিক্রি। শুধু বালি বিক্রিই নয়, মনতলা, চৌমুহনী ও রসুলপুর নামক স্থান থেকে প্রায় ১৭শ ২৩ একরের সিলিকা বালু কোয়ারীতে চলছে অর্ধশতাধিক অবৈধ মেশিন। এ যেন অবৈধ বালু মহালে বৈধ উত্তোলন যজ্ঞ। প্রকাশ্যে দিবালোকে চলে বড় বড় ট্রাক ট্রাক্টর যোগে বালু বিক্রি। আর এ বালু উত্তোলন ও বিক্রয় কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রন করছে মাধবপুরে মনতলা এলাকার কিসমতপুর কিসমত ও মনোহরপুর মৌজায় সাধারন বালু মহাল জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে আশপাশের ১৫টি মৌজা থেকে মূল্যবান সিলিকা বালু বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর তালিকাভূক্ত মাধবপুরের ৩টি বালু কোয়ারী থেকে সাধারণ বালুর রশিদে খনিজ বালু বিক্রি করায় সরকার প্রায় ৭ কোটি টাকার রাজস্ব হারাতে বসেছে।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ১৪৩২ বাংলা সনের জন্য মনতলা সাধারন বালু মহালটি ইজারা নেন উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি, ৬নং শাহজাহানপু ইউ/পি চেয়ারম্যান পারভেজ হোসাইন চৌধুরী। দুটি মৌজার একসনা মহালটি ৩৯ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭শত ৫০ টাকায় ইজারা গ্রহন করেন। কিসমতপুর ও মনোহরপুর নামের দুই মৌজার মহালটির নাম করে মনতলা খনিজ বালু কোয়ারীর বোরহানপুর, ভবানীপুর,দূর্লভপুর, আফজলপুর ও বহরা, চৌমুহনী কোয়ারীর কাশিমপুর, আলাবক্সপুর, মনোহরপুর, মঙ্গলপুর, গাজীপুর, আশ্রবপুরে এবং রসুলপুর বালু কোয়ারী এক্তিয়ারপুর, ভান্ডারুয়া, শাহজাহানপুর, সম্পদপুর, বড়ধলিয়া, সেলিমপুর ও রসুলপুর উত্তর মৌজাসহ আশপাশের এলাকায় অর্ধশতাধিক মেশিন বসিয়ে চলছে বালু উত্তোলন। খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৪৩০ বাংলা সনে উপজেলার রসুলপুর, মনতলা ও মনতলা চৌমুহনী বালু কোয়ারী ২৮.০৭.০০০০.০০৫.৬৬.০০২.২২(অংশ-০১)-৫৬৫ স্মারকের ইজারা গ্রহন করে পারভেজ হোসাইন চৌধুরী। ওই সিলিকা বালুর কোয়ারীর মেয়াদ শেষ হয় চলতি বছরের গত এপ্রিল মাসের ১৩ তারিখ। মেয়াদ শেষ হলেও সোনাই নদী ও রসুলপুর এলাকার বালু মহাল ৩টি নিয়ন্ত্রনে রেখে প্রতিদিন ট্রাক ট্রাক্টর যোগে লক্ষ লক্ষ টাকার বালু বিক্রি হচ্ছে। ইজারা মেয়াদ শেষ হলেও বন্ধ হয়নি সিলিকা বালু উত্তোলন ও বিক্রি। সরকারের প্রায় ৭ কোটি টাকা মূল্যের ৩টি বালু মহাল থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার বালু বিক্রি করার অভিযোগ। গত বছরের ইজারাদার উপজেলা বিএনপি’র সহসভাপতি পারভেজ হোসাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে। ইজারা মেয়াদ শেষ হলেও ৩টি মহালের প্রায় ১৭শ ২৩ একর এরিয়া সহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ব্যক্তিগত ভূমি বালু উত্তোলন ও বিক্রি। ইজারাবিহীন কোয়ারীগুলো থেকে বালু বিক্রি করে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকায় পকেট ভারী করছে গত বছরের ইজারদার সিন্ডিকেট। প্রকাশ্যে দিবালোকে মেয়াদ উত্তীর্ণ মহাল থেকে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করা হলেও স্থানীয় প্রশাসন থাকছে নিরব। প্রশাসনের নিরব ভূমিকা নিয়ে সচেতন মহলে চলছে সমালোচনা। সম্প্রতি বালু উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধে সোনাই নদী রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরারব অভিযোগ করেন। কমলানগর গ্রামের জাহাঙ্গীর মিয়া স্থানীয় সেনা ক্যাম্পে এবং শাহজাহান মিয়া নামে এক ব্যক্তি জেলা প্রশাসক বরারব অভিযোগ করেন। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অবৈধ বালু উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধে আবেদন করা হলেও প্রশাসনের জোড়ালো ভূমিকা না থাকায় আক্ষেপ প্রকাশ করছেন অভিযোগকারীরা। এ যেন অবৈধ মহালে বৈধ যজ্ঞ। প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা না থাকায় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছেনা। সম্প্রতি কোন অদৃশ্য শক্তিতে কোটি কোটি টাকার বালু পাচার হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা চলছে সচেতন মহলের মাঝে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com