হজরত দাউদ (আ.)কে উদ্দেশ করে মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে দাউদ, নিশ্চয়ই আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি নিযুক্ত করেছি। সুতরাং তুমি মানুষের মধ্যে যথাযথভাবে বিচার করো’। (সূরা সোয়াদ : ২৬)। বদরের যুদ্ধে অনেক কাফির মুসলমানদের হাতে বন্দি হয়।
তিনি বলেন, আল্লাহ নিশ্চয়ই তোমার অন্তরকে সঠিক সিদ্ধান্তের দিকে পথ দেখাবেন এবং তোমাকে প্রতিষ্ঠিত রাখবেন। যখন তোমার কাছে মানুষ বিচার-ফয়সালার জন্য আসবে, তখন তুমি যেভাবে একপক্ষের বক্তব্য শুনবে তেমনি অপর পক্ষের বক্তব্য না শোনা পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেবে না। এতে তোমার সামনে মোকদ্দমার আসল সত্য প্রকাশিত হবে। আলী (রা.) বলেন, অতঃপর আমি সিদ্ধান্ত গ্রহণে সন্দেহে পতিত হইনি’।
ইবনে বুরাইদাহ তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেছেন, রাসূল (সা.) বলেন, ‘বিচারক তিন ধরনের। এক ধরনের বিচারক জান্নাতি এবং অপর দুই ধরনের বিচারক জাহান্নামি। জান্নাতি বিচারক হলো, যে সত্যকে বুঝে ফয়সালা দেয়। আর যে বিচারক সত্যকে জানার পরও স্বীয় বিচারে জুলুম করে সে জাহান্নামি এবং যে বিচারক অজ্ঞতাপ্রসূত ফয়সালা দেয় সেও জাহান্নামি’।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) খেবে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যেদিন আল্লাহর রহমতের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না, সেদিন (কিয়ামতের দিন) মহান আল্লাহতায়ালা সাত ব্যক্তিকে আরশের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। সে সাত ব্যক্তির মধ্যে এক ব্যক্তি হলেন ন্যায়পরায়ণ শাসক’।
ইনসাফের নিয়তে বিচারক সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলেও সওয়াবের কথা বলা হয়েছে হাদিসে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘বিচারক যখন তার বিচারকার্য করে এবং আলোচ্য বিষয়ে চূড়ান্ত প্রয়াস পায়, অতঃপর যদি তার রায় সঠিক হয় তবে তার জন্য দুটি সওয়াব। আর যদি সে বিচারে ভুল করে তবে তার জন্য একটি সওয়াব’।
ন্যায়বিচার না করার কারণে পৃথিবীতে অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও জাতি ধ্বংস হয়ে গেছে। ন্যায়ের বিধান সর্বকালের ও সব শ্রেণির পেশার মানুষের জন্য সমান। সব আসমানি কিতাবেও এ নির্দেশনা রয়েছে। নবিজি (সা.) নিজেও আজীবন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন। এমনকি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় পূর্ববর্তী নবি-রাসূলদের ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
Leave a Reply