মাধবপূর প্রতিনিধি ॥ মাধবপূর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানের সোলার স্ট্রিট লাইটগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে বছরের পর বছর। স্ট্রিট লাইট প্রকল্পের কাঙ্ক্ষিত সুফল পাচ্ছে না উপজেলাবাসী। লাখ লাখ টাকার আলোর প্রকল্প নিবে অন্ধকারে। গ্রামীন সড়কের সৌর সড়কবাতির প্রায় অধিকাংশই নষ্ট ও চুরি হয়ে গেছে। সড়কের বাতিগুলো নষ্ট হওয়ার কারণে রাতের অন্ধকারেই চলাচল করতে হচ্ছে গ্রামীণ জনপদের হাজার হাজার মানুষকে। এতে রাতের আঁধারে ঘটছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এসব স্ট্রিট লাইটে সৌরবিদ্যুতের প্যানেল আছে কিন্তু বাতি নেই। আবার কোথাও বাতি থাকলেও প্যানেল নেই। অনেক সড়কে দেখা গেছে ব্যাটারি ও লাইটহীন। কোন সময় চুরি হয়েছে এসব ব্যাটারি ও সোলার প্যানেল কখনো খোঁজখবর রাখেননি বা মেরামতের প্রয়োজনও বোধ করেনি কর্তৃপক্ষ। তিন বছর পর্যন্ত দেখভালের কথা থাকলেও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও কার্যকর কোনো ভূমিকা নেই। বাতিগুলো ৩ বছর আলো দেওয়ার কথা থাকলেও কয়েক মাসের মধ্যেই তা অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় টিআর-কাবিখা বরাদ্দের মাধ্যমে সড়কবাতি বাস্তবায়ন করা হয়। ২০১৫-১৬, অর্থ বছরে ৩ টি, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫৩ টি, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৩০টি, ২০১৮-১৯অর্থ বছরে ২৩১টি এবং ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ২১৩ টি স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়। প্রতিটি স্ট্রিট লাইট স্থাপনে গড়ে খরচ ধরা হয়েছে ৫৬ হাজার টাকা। এসব বাতির ৩ বছর আলো দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই অধিকাংশই নষ্ট ও চুরি হয়ে গিয়েছে। ঠিক কতটি স্ট্রিট লাইট নষ্ট বা চুরি হয়ে গেছে এর সঠিক তথ্য নেই দপ্তরে। উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের আহাম্মদ পূর গ্রামের রাজু জানান ধর্মঘর কালিবাজার রাস্তার দিঘীর পার মোড়ে স্ট্রিট লাইট আগে ভালোই জ্বলত এক-দেড় বছর জ্বলার পর লাইটি আর জ্বলে না। কখনো কেউ দেখতে আসেনি যে লাইটগুলো ঠিকঠাক মতো জ্বলছে কি না। এখন রাস্তার মোড়গুলো অন্ধকারেই হয়ে থাকে। তাই লাইটগুলো দ্রুত মেরামতের দাবিও জানান তিনি। ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন জানান বছরের পর বছর নষ্ট হওয়া সড়কবাতিগুলো মেরামত না করায় সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গ্রামীণ জনপদের বাসিন্দারা। রক্ষণাবেক্ষণে সঠিক তদারকি না থাকায় খুব অল্প সময়েই নষ্ট ও চুরি হয়েছে এই সব স্ট্রিট লাইট।স্ট্রিট লাইটগুলো লাগানোর কিছুদিন পরই নষ্ট হয়ে যায়। এগুলো মেরামত বা দেখভাল করার জন্য কাওকে কখনো দেখা যায়নি। মাধবপূর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ জানান, ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। আর যে সব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লাইটগুলো স্থাপন করা হয়েছিল, তাদের চুক্তির মেয়াদ তিন বছর শেষ হয়ে গেছে। চুক্তির মেয়াদ শেষের পর সৌর বাতিগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য কোনো বরাদ্দ না থাকায় এখন আপাতত কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দ পাওয়াসাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হতেপারে। মাধবপূর প্রকল্প কর্মকর্তার অফিস সূত্রে আরও জানা যায় আলো প্রকল্প মেয়াদ শেষের আগেই জামানতের টাকা উত্তোলন হয়ে গিয়েছে। সোলারঅ্যান্ড ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার জহিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান- আমরা এখন পর্যন্ত জামানতের টাকা পাইনি।
Leave a Reply