সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ১১:২৫ অপরাহ্ন

হলুদ ও সবুজ রঙের স্কোয়াশ চাষে সফল কৃষক সানু মিয়া

হলুদ ও সবুজ রঙের স্কোয়াশ চাষে সফল কৃষক সানু মিয়া

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বাহুবল উপজেলার ভুলকোট গ্রামের কৃষক সানু মিয়া হলুদ ও সবুজ রঙের স্কোয়াশ চাষ করে দারুণ সফলতা অর্জন করেছেন। মাত্র ৮ শতক জমিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্কোয়াশ চাষ করেছেন তিনি। এই উদ্যোগে তার ব্যয় হয়েছে মাত্র ৪ হাজার টাকা, কিন্তু আশা করা হচ্ছে তিনি ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীমের পরামর্শে সানু মিয়া সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় স্কোয়াশ চাষ শুরু করেন। তার ক্ষেত ভরা সবুজ ও হলুদ স্কোয়াশ স্থানীয়দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কৃষক জানান, চার বছর আগে প্রথমবারের মতো সবুজ স্কোয়াশ চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন। এবার দুই রঙের স্কোয়াশ চাষ করায় ফলন আরও ভালো হয়েছে।
স্কোয়াশ চাষে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে জমি আগাছামুক্ত রাখা হয়েছে এবং পোকা দমনে হলুদ ও ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা হয়েছে। বর্তমানে স্কোয়াশ ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা এটি বেশ আগ্রহের সঙ্গে কিনছেন।
অক্টোবর মাসে স্কোয়াশের চারা রোপণ করা হয়। ১০-১৫ দিনের মধ্যে পরাগায়ন সম্পন্ন হলে স্কোয়াশ সংগ্রহ করতে হয়। সবুজ স্কোয়াশ সংগ্রহের সময় এটি মসৃণ ও উজ্জ্বল থাকে, আর হলুদ স্কোয়াশ শুরু থেকেই হলুদ রঙ ধারণ করে। নখ দিয়ে চাপ দিলে স্কোয়াশ নরম হলে সংগ্রহের উপযুক্ত হয়। সানু মিয়ার ছেলে জসিম উদ্দিন জানান, তাদের ক্ষেত ভরা স্কোয়াশ দেখে এলাকার অন্য কৃষকরাও এ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। ক্রেতারা বলেন, স্কোয়াশ সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। এটি স্থানীয়ভাবে আরও বেশি উৎপাদন করা হলে কম দামে পাওয়া সম্ভব।
উপজেলার দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম বলেন, স্কোয়াশ একটি উচ্চমূল্যের ফসল, যা বিদেশে দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রিয়। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তুলনামূলক কম উর্বর জমি ও চরাঞ্চলেও স্কোয়াশের ভালো ফলন সম্ভব।
স্কোয়াশ পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি সবজি। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই, বি-৬, নায়াসিন, থায়ামিন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়ামসহ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
স্কোয়াশ দ্রুত বর্ধনশীল একটি সবজি, যা সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার সংগ্রহ করে বিক্রি করা যায়। এটি সাধারণ কুমড়ার মতো ব্যবহার হলেও পুষ্টিগুণে অনেক এগিয়ে। সানু মিয়ার সাফল্য স্থানীয় কৃষকদের স্কোয়াশ চাষে উৎসাহিত করছে, যা ভবিষ্যতে দেশের সবজি চাষে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com