মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি মুরাদ আহমদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ আজমিরীগঞ্জের ভাটিতে বজ্রপাতে এক শিক্ষার্থী ও গরুর মৃত্যু পুলিশ ফোর্স এক্সেমপ্লারি গুড সার্ভিস ব্যাজ পেলেন হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার আবার চালু হতে যাচ্ছে পরিত্যক্ত শমশেরনগর বিমানবন্দর চুনারুঘাটে বোরো বাম্পার ফলনে কৃষকের আনন্দের হাসি ‘লাভ অ্যান্ড গান্স মাফিয়া টেলস’-এ বাংলাদেশি সংগীতশিল্পী লিটন শেখ লাখাইয়ে পৃথক অভিযানে ইয়াবা সহ গ্রেফতার ৩ শায়েস্তাগঞ্জে সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের মতবিনিময় সভা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মামলায় ইউপি সদস্যসহ গ্রেফতার ২ নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জে পলাতক আসামী গ্রেফতার
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস আজ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ। মায়ের ভাষার দাবিতে বাঙালির আত্মত্যাগের মহিমায় ভাস্বর গৌরবের একদিন। বাঙালির আত্মগৌরবের অনন্য এক স্মারক। অমর একুশের এইদিনে জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে মহান ভাষা শহীদদের, যাদের আত্মত্যাগে আমরা পেয়েছি মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার। যাদের ত্যাগে বাংলা বিশ্ব আসনে পেয়েছে গৌরবের উচ্চাসন। একুশের প্রথম প্রহর থেকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হচ্ছে মহান ভাষা শহীদদের। সকালে প্রভাতফেরির মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হবে ভাষা শহীদদের। এবার ভিন্ন এক পরিবেশে উদ্যাপিত হচ্ছে অমর একুশে। ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবারই প্রথম একুশ উদ্যাপন হচ্ছে। স্বাধীন ও মুক্ত পরিবেশে এবার সব দল, মতের মানুষ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস পালনের সুযোগ পেয়েছে। রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যদিয়ে একুশের কর্মসূচি শুরু হয়। প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাস্কৃতিক সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষের পক্ষ থেকে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানো হবে। কালোব্যাজ ধারণ, ভোরে প্রভাতফেরি সহকারে আজিমপুর কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানো হবে। এদিকে মহান ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন। দিবসটি পালন উপলক্ষে জাতীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করবে। আজিমপুর কবরস্থানে ফাতেহা পাঠ ও কোরআনখানির আয়োজনসহ দেশের সকল মসজিদে ভাষা শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া এবং উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষায় ১৯৫২-এ জীবন দিয়েছিলেন সালাম, বরকত, জব্বার, রফিক, শফিউল্লাহসহ নাম না জানা অনেকে। তাদের রক্তের বিনিময়েই আজকে মুখে মুখে বাংলা ভাষা। বাংলায় রচিত হচ্ছে হাজারো গান, কবিতা, নাটক, উপন্যাস আর অজস্র কথামালা। আজকের দিনটি শুধু সেই বীর ভাষাসৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর, যারা ভাষার জন্য অকাতরে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন। দিনটি কেবল বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের সব প্রান্তে পালিত হচ্ছে বীরের রক্তস্রোত আর মায়ের অশ্রুভেজা অমর একুশে। বাঙালির রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে। এরপর থেকেই যথাযোগ্য মর্যাদায় সারা বিশ্বে একযোগে পালিত হয়ে আসছে দিনটি। একুশের এই দিনে বাংলার সংগ্রামী ছেলেরা যে ত্যাগ ও গৌরবগাথা রচনা করেছিলেন, তারই পথ ধরে আমরা মুখোমুখি হই স্বাধীনতা সংগ্রামে। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। লাভ করি লাল-সবুজের পতাকা। ১৯৫২ সালের এই দিনে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ঘোষিত ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনরত বাঙালি রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করে। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে হরতালের প্রস্তুতি চলতে থাকে। সরকার ২০শে ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় একটানা এক মাসের জন্য ঢাকা জেলার সর্বত্র হরতাল, সভা, মিছিলের ওপর ১৪৪ ধারা জারি করে। এসব নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ছাত্ররা দলে দলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমায়েত হয়। ঐতিহাসিক আমতলায় ছাত্রদের সভা থেকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরিকল্পনা করা হয়, চার জন চার জন করে মিছিল নিয়ে বের হওয়ার। ছাত্ররা মিছিল শুরু করলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে ট্রাকে তুলতে থাকে। বিকাল ৩টায় গণপরিষদের অধিবেশনের আগেই শুরু হয়ে যায় ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ। বিকাল ৪টায় পুলিশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে ছাত্রদের ওপর গুলি চালায়। বুলেট কেড়ে নেয় জব্বার ও রফিকের প্রাণ। গুলিবিদ্ধ আবুল বরকত রাত পৌনে আটটায় হাসপাতালে মারা যান। তাদের মৃত্যু সংবাদে বাংলা ভাষার প্রাণের দাবি সারা দেশে স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়ে। শাসকগোষ্ঠী বাংলা ভাষার দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়। এরপর থেকেই একুশে ফেব্রুয়ারি অমর ভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com