নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ আজমিরীগঞ্জে পরিবেশ আইন অমান্য করে ফসলি জমি থেকে গভীর রাতে মাটি কেটে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে একাধিক অসাধুচক্র। এতে করে কোন মতেই থামানো যাচ্ছে না জমির উপরিভাগ ‘টপ সয়েল’ বিক্রি। আবার মাটি ব্যবসায়ীরা কম দামে জমির উর্বর এই মাটি কিনে বিক্রি করছে বেশি দামে। ফলে কৃষি জমির উর্বরতা হারানোর পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশের ভারসাম্য। মাটিভর্তি ট্রলি চলাচল করায় ভেঙ্গে যাচ্ছে এলাকার রাস্তা-ঘাট। এদিকে এলাকার একাধিক অসাধুচক্র আজমিরীগঞ্জ পৌরসভাধীন নৌ-টার্মিনালের অদূরে জেগে উঠা কুশিয়ারার কালনী নদীর বিশাল চর থেকে বেশ কিছু দিন ধরে দিবাগত রাত ১২ টার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত মাটি কেটে বিভিন্ন স্থানে নগদ টাকায় বিক্রি করে আসছে। এসব মাটি কিনে ব্যবসা প্রতিষ্টান ও বসত ঘরের ভিট তৈরি করছে। চরবাজারে একটি ট্রলিভর্তি মাটি ৩০০, পুকুরপাড়, সমীপুর, জগৎপুর ৩৫০ ও শরীফনগর আজিমনগর ইত্যাদি স্থানে ৪০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। কোন কোন সময় দিনেও মাটি কেটে বিক্রি করতে দেখা যায়। যদিও প্রশাসন বলছে, জমির উপরিভাগের মাটি কাটা অবৈধ। যারা অবৈধভাবে মাটি কাটবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান চলমান থাকবে। তবে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার সর্বত্রই অবাধে চলছে কৃষি জমি থেকে মাটি বিক্রি। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাওরের বিভিন্ন জমিতে লেগে আছে ট্রাক-ট্রাক্টরের দীর্ঘ লাইন। ফসলি এসব জমি থেকে এক্সেভেটরের মাধ্যমে মাটি কেটে সেগুলো পরিবহন করা হচ্ছে ট্রাক্টরের মাধ্যমে। আর এসব মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে নানা ধরণের কাজে। অন্যদিকে কতিপয় ব্যবসায়ী মাটি কিনে উন্মূক্ত জায়গায় বিক্রির জন্য স্তুুপ করে রাখে। এরা প্রতি ট্রাক্টর মাটি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় চালকদের কাছ থেকে ক্রয় করে সেগুলো বিক্রি করে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায়। আর এতে করে অধিক মুনাফা আদায় করে নিচ্ছে চক্রটি। কৃষি অফিসের দেয়া তথ্যমতে, জমির উপরিভাগের ছয় থেকে দশ ইঞ্চিতে জৈব পদার্থ বিদ্যমান থাকে। উপরিভাগ কাটার ফলে জমির ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা হ্রাস পায়। তাই সেগুলো কাটা অথবা বিক্রি করা যাবে না। তবুও অসাধু চক্রের ফাঁদে পড়ে সামান্য কিছু টাকার জন্য জমির উপরিভাগের মাটি কাটার অনুমতি দিচ্ছেন সাধারণ কৃষকরা। এদিকে, কৃষি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটার বিষয়ে মাঝে-মধ্যে অভিযান চালিয়ে জেল-জরিমানা করছে উপজেলা প্রশাসন। তবে তাদের এই অভিযান কোন কাজেই আসছে না। সকালে অভিযান চালিয়ে জেল জরিমানা দিলেও বিকেলেই একই জায়গা থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে মাটি। অথবা রাতের আধারে ট্রাক-ট্রাক্টরের মাধ্যমে কৃষি জমির মাটি পাচার করা হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। এমতাবস্থায় পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখতে এবং এলাকার রাস্তা ঘাট রক্ষায় প্রশাসনের আরও কঠোর নজরদারি কামনা করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। ১৬
Leave a Reply