বুধবার, ১৬ Jul ২০২৫, ০৬:৫১ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মানবিকতার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত নবীগঞ্জের দুই সাহসী সাংবাদিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শহীদ হন পাঁচ সাংবাদিক সিলেটের তামাবিল দিয়ে ভারতে গেল প্রধান উপদেষ্টার উপহারের আম নবীগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষা ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ফলজ চারা বিতরণ আন্দিউড়া উম্মেতুন্নেসা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি তদন্তে দুদক চুনারুঘাটের নারী শ্রমিককে ভৈরবে ধর্ষণ করল কারখানা মালিক শায়েস্থাগঞ্জ ও অলিপুর মহাসড়কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করল সওজ চুনারুঘাটের আমু বাগানের চা শ্রমিক মায়ের আর্তনাদ ৩০ বছর কারাগাভোগের পর মুক্ত হলেন লাখাই’র কনু মিয়া বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সফল হবেনা শিক্ষাবৃত্তি অনুষ্ঠানে এসএম ফয়সল
মানবিকতার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত নবীগঞ্জের দুই সাহসী সাংবাদিক

মানবিকতার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত নবীগঞ্জের দুই সাহসী সাংবাদিক

নবীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সাংবাদিকতা শুধুমাত্র কলমের ভাষায় সংবাদ পরিবেশন নয়, এটি এক অসীম দায়িত্ববোধ, সাহসিকতা এবং মানবতার এক অনন্য যাত্রা। এই মহান পেশার গর্বিত উত্তরসূরি হয়ে নবীগঞ্জের দুই সাংবাদিক, দৈনিক দেশের পত্র পত্রিকার প্রতিনিধি জসীম উদ্দীন ও তাজুল ইসলাম, প্রমাণ করেছেন—একজন প্রকৃত সাংবাদিক কখনো শুধু পর্যবেক্ষক নয়, বরং সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়ানো একজন সহযোদ্ধা।
গত ৮ জুলাই, নবীগঞ্জ শহরে ঘটে ভয়াবহ সংঘর্ষ। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপজেলা প্রশাসন শহরজুড়ে তিন দিন যাবত ১৪৪ ধারা জারি করে। এতে পুরো শহর কার্যত অচল হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ ঘরবন্দি হয়ে যায়। বিশেষ করে চরম বিপাকে পড়েন অসুস্থ ও বৃদ্ধরা। অনেকেই জীবন রক্ষাকারী জরুরি ঔষুধের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, কিন্তু কোনো উপায় ছিল না।
এই কঠিন সময়ে শহরের অন্য সবার মতো সংবাদ সংগ্রহে মাঠে ছিলেন সাংবাদিক জসীম উদ্দীন ও হবিগঞ্জের স্থানীয় দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার প্রতিনিধি তাজুল ইসলাম। কিন্তু এখানেই তাদের পেশাগত সীমা শেষ হয়নি। বরং এখান থেকেই শুরু হয় একটি মানবিক মিশন।
তারা তাৎক্ষণিকভাবে ফেসবুকে পোস্ট ও লাইভ করে জানিয়ে দেন—
যেসব অসুস্থ রোগীর জরুরি ঔষুধ ঘরে নেই, তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আমরা ঔষুধ কিনে পৌঁছে দেবো।”
এই সাহসী ঘোষণা মুহূর্তেই মানুষের মাঝে আশার আলো জাগিয়ে তোলে। অসংখ্য ফোন আসতে শুরু করে তাদের কাছে। একজন পেশাদার সাংবাদিক হয়েও তারা সেই মুহূর্তে হয়ে উঠেন সমাজের সেবক। পার্শ্ববর্তী আউশকান্দি বাজার থেকে নিজেদের অর্থে ঔষুধ কিনে অসুস্থ রোগীদের বাসায় বাসায় গিয়ে পৌঁছে দেন।
তাদের এই কাজ সমাজে সৃষ্টি করে ব্যতিক্রমী আলোড়ন ও প্রশংসা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন বলেন—এমন উদ্যোগ সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সাংবাদিকতার গণ্ডি পেরিয়ে সমাজ সেবায় যে ভূমিকা তারা রেখেছেন, তা অনুকরণীয়।নবীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ শেখ মোঃ কামরুজ্জামান বলেন—
তাদের সাহসিকতা ও মানবিক উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়ানো একজন সত্যিকারের সাংবাদিকের পরিচয়।”
নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুর কলেজের অধ্যক্ষ তনুজ রায় বলেন—
জসীম ও তাজুল শুধু সাংবাদিক নয়, তারা মানবতার প্রতিচ্ছবি। তাদের মতো মানুষ সমাজের জন্য অনুপ্রেরণা।
এই দুই সাংবাদিক আমাদের সমাজের সেই আলো, যারা শুধু অন্যদের খবর পরিবেশন করেন না, নিজেরাই একজন সংবাদ হয়ে ওঠেন। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হলো—সাংবাদিকতা শুধুমাত্র পেশা নয়, এটি একটি মানবিক প্রতিজ্ঞা। এই প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়ন করেই তারা সমাজে দেখিয়ে দিয়েছেন সত্যিকারের ‘সাংবাদিকতা’ কী।
মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নামই মানবতা।
আর এই মানবতার অগ্রভাগে দাঁড়িয়ে আছেন জসীম উদ্দীন ও তাজুল ইসলাম।
তাদের এই মহতী উদ্যোগ শুধু প্রশংসনীয় নয়, বরং সমাজের সকল শ্রেণিপেশার মানুষের জন্য একটি উদাহরণ।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com